সি এস খতিয়ান অনলাইনে দেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হলে আগে ডিজিটাল রেকর্ড রুম সম্পর্কে কিছুটা জানতে হবে। আক্ষরিক অর্থে এটি কোন রুম বলে মনে হবে।
মুলত ডিজিটাল রেকর্ড রুম বলতে কোন নির্দিষ্ট রুম কে প্রকাশ করে না। বরং সাধারণ ভাবে বলা যায় এটি একটি সার্ভার যেখানে জমি সংক্রান্ত সকল তথ্য রাখা হয় এবং প্রতিটি জেলার ডিসি অফিস থেকে সেবা প্রদান করা হয়।
এই ডিসি অফিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ কে ডিজিটাল রেকর্ড রুম বলা হয়।
২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ইং তারিখে ‘হাতের মুঠোয় ভূমিসেবা’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মাননীয় ভূমি মুন্ত্রী ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশের ২১ টি জেলার রেকর্ড রুমের নাগরিক সার্ভিস ই-সার্ভিস বা ডিজিটাল সার্ভিসে রূপান্তরের কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এরই মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে অনলাইনে ভূমি সেবার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। ভূমি সংক্রান্ত সকল সেবা অনলাইনের মাধ্যমে সকল জনগনের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া যার প্রধান উদ্দেশ্য।
যার ফলে ভূমি সংক্রান্ত প্রায় সকল সেবা খুব সহজে প্রদান করা সম্ভব হবে। এতে করে মানুষের ভূমি অফিসে ভোগান্তি ও দ্রুত মামলা নিস্পত্তি সহ নানা জটিলতা থেকে মুক্ত পাবে।এবং জমি সংক্রান্ত নানা কারনে দালালের চক্রান্ত থেকে মুক্তি পাবে।
তাই আমরা খুব সহজে বললে বলতে পারি ডিজিটাল রেকর্ড রুম হলো ভুমি সংক্রান্ত সকল সেবা প্রদানের অনলাইন মাধ্যম যা সকলের জন্য উন্মক্ত।
সি এস খতিয়ান অনলাইনে দেখার নিয়ম
আমরা ইতিমধ্যে ডিজিটাল রেকর্ড রুম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। প্রতিটি জেলায় ডিসি অফিস কর্তৃক ডিজিটাল রেকর্ড রুম কে নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে।
গ্রাহক যখন অনলাইনের মাধ্যমে কোন সেবা গ্রহনের জন্য আবেদন করে তখন তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ডিজিটাল রেকর্ড রুম থেকে উপজেলা ভূমি অফিসের মাধ্যমে উক্ত সেবা প্রদান করে থাকে।
আপনি যদি ডিজিটাল রেকর্ড রুম থেকে সি এস খতিয়ান পেতে চান তাহলে তার সম্পুর্ণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
সি এস খতিয়ান বের করার নিয়ম সম্পর্কে জানুন
ডিজিটাল রেকর্ড রুম থেকে সি এস খতিয়ান বের করা বা অনলাইনে সি এস খতিয়ান বের করা বর্তমানে অনেক সহজ। এ পর্যায়ে এই বিষয়ে বিস্তারিত বর্ননা করা হচ্ছে।
অনলাইনে সি এস খতিয়ান বের করার জন্য প্রথমে আপনাকে যেকোন ব্রাউজার থেকে ইপর্চা এই সাইটে ভিজিট করতে হবে।
উক্ত সাইটে ভিজিট করার পরে আপনি নিচের ছবির মত একটি ইন্টারফেস দেখতে পাবেন।
এখানে বাই ডিফল্ট সার্ভে খতিয়ান অপশনটি সিলেক্ট করা থাকবে। এবং নিচের দিকে সার্ভে খতিয়ান অনুসন্ধান নামে একটি ফরম দেখতে পাবেন। এই ফরমে বিভাগ অপশনে আপনার জমির অবস্থান অনুযায়ী বিভাগ, জেলা কলামে জেলা এবং উপজেলা কলামে উপজেলা নির্বাচন করুন।
এরপর খতিয়ানের ধরন কলামে সি এস খতিয়ান নির্বাচন করুন। এরপরের কলামে আপনাকে আপনার জমির অবস্থান অনুযায়ী মৌজা কলামে আপনার গ্রাম বা মৌজা সিলেক্ট করুন। এরপর আপনি খতিয়ানের তালিকা কলামে উক্ত মৌজার সকল সি এস খতিয়ানের তালিকা দেখতে পাবেন।
এখন আপনি আপনার জমির নিদিষ্ট খতিয়ান সিলেক্ট করুন এবং উক্ত খতিয়ানের উপর ডাবল ক্লিক করুন। যদি আপনি আপনার কাঙ্খিত খতিয়ান নম্বর না পান তা হলে অধিকতর অনুসন্ধান বাটনে ক্লিক করুন। এখন মালিকের নাম এবং জমির দাগ নম্বর বসিয়ে খুজুন বাটনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনি আপনার খতিয়ান পেয়ে যাবেন।
খতিয়ান নম্বরের উপরে ডাবল ক্লিক করার পরে আপনি নিচের ছবির মত আকটি ইন্টারফেস দেখতে পাবেন।
সি এস খতিয়ান অনুসন্ধান যেভাবে করবেন
সি এস খতিয়ান অনুসন্ধান করার জন্য ইপর্চা এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করে উপরে উল্লেখিত সকল নিয়ম মেনে অনুসন্ধান করতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে যে অনলাইনে আপনি সরাসরি আপনার খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি পাবেন না।
সি এস খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি পাওয়ার জন্য উপরের ছবিতে দেখানো খতিয়ান আবেদন অপশনে ক্লিক করুন।
ক্লিক করার পরে আপনি নিচের ছবির মত একটি খতিয়ান আবেদন ফরম দেখতে পাবেন।
এই ফরমে আগে থেকে কিছু তথ্য থাকবে এবং বাকিটা আপনাকে সঠিক ভাবে পুরুন করতে হবে। এবং সর্বশেষ যেকোন মোবাইল ব্যাংক এর মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে হবে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এই পোষ্ট টি পড়তে পারেন।
সিএস খতিয়ান কত সালে হয় জানুন
সিএস যার পুর্ণ রুপ Cadastral Survey ( CS ) । এটি ভারত উপমহাদেশের প্রথম জরিপ় যা ১৮৮৮ সাল হতে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত পরিচালনা করা হয়।
শেষ কথা
এতক্ষন আলোচনা করা হয়েছে ডিজিটাল রেকর্ড রুম থেকে সি এস খতিয়ান বের করার নিয়ম সমর্কে। এই আর্টিকেলে ডিজিটাল রেকর্ড রুম এবং সি এস খতিয়ান এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আশা করি আপনারা এই বিষয়ে খুব ভালো ভাবে বুঝতে পেরেছেন। এ বিষয়ে যদি কারও কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টস মাধ্যমে জানাবেন।