কাপড়ের ব্যবসা কিভাবে শুরু করব ? প্রশ্ন টি প্রায় সকলের পরিচিত। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার এই বাংলাদেশে দিন দিন চাকরির সুযোগ কমে যাচ্ছে।
আর তাই বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষিত জনগোষ্টি ব্যবসা বানিজ্যের দিকে ঝুকছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জনপ্রিয় ব্যবসার মধ্যে অন্যতম ব্যবসা হলো কাপড়ের ব্যবসা।
কাপড়ের ব্যবসা এমন একটি ব্যবসা যে ব্যবসায় লসের সম্ভাবনা নাই বললেই চলে। আর তাই নতুন ব্যবসায়ী হিসাবে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করার চিন্তা করতেই পারেন।
তবে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করার আগে কয়েক টি বিষয় বিবেচনা করা উচিত। যেমন কাপড়ের দোকান কোথায় দিবেন, কেমন ডেকোরেশন করবেন, কোথা থেকে কাপড় পাইকারি দামে কিনবেন ইত্যাদি।
কাপড়ের ব্যবসা কিভাবে শুরু করব এই আর্টিকেলে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করার সকল দিক নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
আরও দেখুন- কয়েকটি পাইকারি ব্যবসার নাম ও ছোট ফ্যাক্টরি আইডিয়া
কাপড়ের ব্যবসা কিভাবে শুরু করব বা করবেন জানুন
কাপড়ের ব্যবসা কিভাবে শুরু করব বা শুরু করার জন্য আপনাকে একটি স্থান নির্বাচন করতে হবে যেখানে আপনি আপনার কাপড়ের দোকান স্থাপন করবেন।
আমরা অনেকেই মনে করি যেখানে কাপড়ের দোকান নাই বা বাজার প্রতিযোগিতা কম সেখানে কাপড়ের দোকান দিলে ভাল বেচা কেনা হবে।
কিন্ত না , আপনার ধারণা ভুল। সাধারনত গ্রাম কিংবা শহর বর্তমানে প্রায় সকলেই জামা কাপড় কেনার জন্য উপজেলা বা ইউনিয়ন পর্যায়ে বড় বাজারে যেয়ে থাকে।
এজন্য আপনি যখন কাপড়ের দোকান স্থাপন করবেন তখন অবশ্যই চেষ্টা করবেন শহর বা উপযেলা পর্যায়ে দোকান স্থাপন করবেন।
আপনি হয়তো জেনে থকবেন যে কোন দোকান ভাড়া নেওয়ার জন্য দোকান মালিক কে একটি নিদিষ্ট পরিমাণ নগদ অর্থ প্রদান করতে হয়।
দোকান দেওয়ার পর আপনাকে একটি নিদিষ্ট প্রকারের কাপড় দোকানে তুলতে হবে। যেমন গার্মেন্টস আইটেম, বাচ্চা দের কাপড়, থান কাপড় বা সিট কাপড় ইত্যাদি ।
গার্মেন্টস কাপড়ের ব্যবসা কিভাবে করবেন
গার্মেন্টস কাপড়ের ব্যবসা করার জন্য আপনি বিভিন্ন গার্মেন্টস এর সাথে চুক্তি করতে পারেন অথবা ঢাকা থেকে পাইকারি দোকান থেকে গার্মেন্টস কাপড় কিনতে পারেন।
এ জন্য সব থেকে ভালো হয় আপনি আপনার পরিচিত জনের মাধ্যমে পাইকারি মার্কেট থেকে কাপড় ক্রয় করলে । তবে অবশ্যই এর জন্য অভিজ্ঞতা সম্পূর্ন ব্যক্তি হতে হবে।
রেডিমেড কাপড়ের ব্যবসা
ব্যবসা হিসাবে রেডিমেড কাপড়ের ব্যবসা টি আপনি সাচ্ছন্দ্যে করতে পারেন। এ জন্য আপনি বিভিন্ন রেডিমেড কাপড় প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান এর সাথে চুক্তি করতে পারেন।
রেডিমেড কাপড়ের ব্যবসার একটি সুবিধা হলো লস হওয়ার ঝুঁকি একেবারেই থাকে না। তবে অনেক সময় ফ্যাশন ট্রেন্ড পরিবর্তন হলে পুরাতন মডেলের কাপড় কম চলে।
বাচ্চাদের কাপড়ের দোকান
কাপড়ের ব্যবসার অন্যতম উপকরণ হতে পারে বাচ্চাদের পোশাক। বর্তমানে অঅধিকাংশ বাচ্চাদের পিতা মাতা তাদের বাচ্চাদের জন্য ভালো মানের কাপড় পছন্দ করে থাকে।
আর তাই আপনি আপনার কাপড়ের দোকানে শুধুমাত্র বাচ্চাদের কাপড় রাখতে পারেন। সুন্দর ডেকোরেশন করে উন্নত পরিবেশ এবং ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার ব্যবসা লাভজনক জরে তুলতে পারেন।
মনে রাখবেন ব্যবসার অন্যতম পূজি হলো গ্রাহকদের সাথে ভালো ব্যবহার। যার জন্য আপনার এবং আপনার দোকানের কর্মচারীদের অধিক ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
শাড়ি কাপড়ের ব্যবসা
শাড়ি কাপড়ের ব্যবসা বর্তমানে প্রায় সকল সময়ে চলমান থাকে। এই ব্যবসার জন্য আপনি আপনার দোকানে বিভিন্ন কোয়ালিটির বিভিন্ন আইটেমের কাপড় রাখতে পারেন।
এর জন্য আবশ্যই আপনাকে উক্ত শাড়ি পাইকারি দামে কিনতে হবে। বাংলাদেশের টাংগাইলের শাড়ির ব্যপক চাহিদা রয়েছে। আপনি আপনার শাড়ির কালেকশনে টাংগাইলের শাড়ি এবং জামদানী শাড়ি রাখতে পারেন।
পাইকারী দামে শাড়ি কিনতে ঢাকার ইসলামপুর মার্কেটে আসতে পারেন। তবে পাইকারি দরে শাড়ি কিনতে হলে একই ডিজাইনের কয়েকটি কালারের শাড়ী কিনতে হবে।
থ্রি পিস কাপড়ের ব্যবসা
কাপড়ের ব্যবসার মধ্যে অন্যতম উপকরণ হলো থ্রি পিস কাপড়ের ব্যবসা। বর্তমানে এই কাপড়ের ব্যবসা অনেক লাভজনক একটি ব্যবসা ।
তাছাড়া বিভিন্ন ঈদ বা সামাজিক অনুষ্ঠানে এই কাপড়ের চাহিদা বেড়ে যায়। থ্রি পিস কপড়ের পাশাপাশি আপনি আপনার দোকানে অন্যান্ন শাড়ি কাপড় ও রাখতে পারেন।
অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা কিভাবে করব জানুন
অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা কিভাবে করব এই প্রশ্ন আমরা অনেকেই করে থাকি। কাপড়ের ব্যবসার প্রচার এবং প্রসারের জন্য অনলাইন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম । এই পর্যায়ে আমরা জানব কিভাবে অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা কিভাবে করব তা সম্পর্কে ।
ইউটিউব এ কাপড়ের রিভিউ এর মাধ্যমে
ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলে আপনি আপনার কাপড়ের দোকানে বিভিন্ন প্রডাক্ট এর রিভিউ দিতে পারেন। বর্তমানে অনেকেই এই প্রক্রীয়ার মাধ্যমে তাদের প্রডাক্টের সেল বৃদ্ধি করছে।
তবে এর জন্য আপনার কথা বলার ধরন এবং ভাষার উত্তম ব্যবহার করতে হবে । এভাবে আপনি আপনার কাপড়ের ব্যবসার পরিধি বাড়াতে পারেন।
ফেসবুকে কাপড়ের ব্যবসা যেভাবে করবেন
ফেসবুকে কাপড়ের ব্যবসা করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে ফেসবুকে একটি পেজ খুলতে হবে। উক্ত পেজে আপনি আপনার প্রডাক্টের উপরে বিভিন্ন ভিডিও বা পোষ্ট রিভিউ দিতে পারেন।
নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরী করে
অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা করার অন্যতম মাধ্যম হলো নিজস্ব একটি ওয়েবসাইট তৈরী করা। উক্ত ওয়েবসাইটে আপনি আপনার দোকানের বিভিন্ন প্রডাক্টের ছবি,দাম,সাইজ ইত্যাদি সহ পোষ্ট লিখতে পারেন।
উক্ত সাইটে আপনার দোকানের ঠিকানা, কন্টাক নম্বর ইত্যাদি সংযুক্ত করবেন। আর দোকানের ব্যানারে আপনি আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর নাম রাখবেন।
এবং দোকানের কার্ড তৈরী করে প্রতিটি গ্রাহক কে দিতে পারেন। এভাবে আপনি আপনার কাপড়ের বিক্রি বাড়াতে পারবেন।
বাচ্চাদের কাপড়ের পাইকারি বাজার কোথায়?
বাচ্চাদের কাপড়ের পাইকারি বাজার ঢাকার গুলিস্তান সংলগ্ন বঙ্গবাজার। এ ছাড়া ঢাকার ইসলামপুরে বাচ্চাদের কাপড়ের পাইকারি বাজার পাবেন।
থ্রি পিসের পাইকারি বাজার কোথায়?
থ্রি পিসের পাইকারি বাজার ঢাকার ইসলাম পুর এবং গুলিস্থান সংলগ্ন বঙ্গবাজার। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ এর ভূলতা এবং বিভিন্ন জেলা শহরের কয়েক টি দোকানে থ্রি পিস কাপড় পাইকারি দামে ক্রয় করতে পারবেন।
কাপড়ের ব্যবসার ঝুঁকি কেমন?
সাধারণত কাপড়ের ব্যবসার ঝুঁকি অনেক কম। কারণ এই ব্যবসায় অন্যান্য ব্যবসায় মত কাচামাল নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় নেই। তবে সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ না হলে কাপড় নষ্ট হলে সেক্ষেত্রে লোকসান গুনতে হতে পারে। তাই সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ অনেক জরুরি। এবং আর একটি জরুরি বিষয় হলো সময় উপযোগী ফ্যাশন এবং ডিজাইন মাথায় রেখে কাপড ক্রয় এবং বিক্রয় করতে হবে।
শেষ কথা
কাপড়ের ব্যবসা কিভাবে শুরু করব এবং অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা কিভাবে করবেন এ বিষয়ে এই পেজে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
যেকোন ব্যবসায় সার্ভিস এবং প্রডাক্ট কোয়ালিটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আর আপনি যদি সততা এবং সাথে মানুষের সাথে ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসা সফল করতে পারেন।