কয়েকটি পাইকারি ব্যবসার নাম ও ছোট ফ্যাক্টরি আইডিয়া সম্পর্কে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচোনা করা হয়েছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার আয়ের উৎস হিসাবে ব্যবসা বানিজ্যের কদর দিন দিন বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশ যে হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে সে হারে চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না।
এমতাবস্থায় আমাদের যুব সমাজকে বিদেশে পাড়ি জমাতে হচ্ছে। যারা দেশে থাকছে তাদের অনেকেই ব্যবসা বানিজ্যের দিকে ঝুকছে।
আবার যারা বিদেশ থেকে দেশে ফেরে তাদের বেশিরভাগ ব্যবসা শুরু করতে চায়। যেকোনো ব্যবসা শুরু করার আগে আপনাকে উক্ত ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত খোজ খবর নিতে হয়।
এই আর্টিকেলে কয়েকটি পাইকারি ব্যবসার নাম এবং ছোট ছোট ফ্যাক্টরি আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আরও দেখুন- গ্রামে বিজনেস আইডিয়া বা কিসের ব্যবসা করা যায়
কয়েকটি পাইকারি ব্যবসার নাম, পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া
ভোক্তা পর্যায়ে ব্যবসা মূলত ২ প্রকারে হয়ে থাকে যেমন খুচরা ব্যবসা এবং পাইকারি ব্যবসা।
খুচরা ব্যবসা এবং পাইকারি ব্যবসার মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।
পাইকারি ব্যবসার সুবিধা হলো সীমিত লাভে বেশি পরিমাণ পন্য বিক্রয়, ফলে মোট লাভের পরিমাণ বেশিই হয়।
এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হলো পাইকারি ব্যবসার পূজি বেশি লাগে এবং বাকি লেনদেন বেশি হয়।
অবশ্য বাকির বিষয়টি অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে।
আমরা যারা পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে চায় তারা বিভিন্ন প্রকার পাইকারি ব্যবসা সম্পর্কে খোজ খবর নিতে থাকি।
এই পর্যায়ে কয়েকটি পাইকারি ব্যবসার নাম উল্লেখ করা হলো।
পাইকারি ব্যবসার নাম বা কয়েকটি ব্যবসার নাম।
১। ইলেকট্রনিক্স পণ্যের পাইকারি ব্যবসা
২। পাইকারি কাপড়ের ব্যবসা
৩। হার্ডওয়্যার মালামালের পাইকারি ব্যবসা
৪। কাঁচামালের পাইকারি ব্যবসা
৫। চা-পাতার পাইকারি ব্যবসা
৬। কসমেটিক এর পাইকারি ব্যবসা
৭। মুদি মালামালের পাইকারি ব্যবসা
৮। পাইকারি মশলার ব্যবসা
৯। পাইকারি প্লাস্টিকের মালামালের ব্যবসা
১০। পাইকারি বাটিক্স আইটেম এবং সুতার ব্যবসা
ইলেকট্রনিক্স পণ্যের পাইকারি ব্যবসা
ইলেকট্রনিক্স পণ্যের পাইকারি ব্যবসা বর্তমানে অনেক লাভজনক একটি ব্যবসা।
বর্তমানে গ্রাম কিংবা শহরে ইলেকট্রনিক্স পন্যের চাহিদা ব্যপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইলেকট্রনিক্স পণ্যের পাইকারি ব্যবসা শুরু করার জন্য স্থানীয় বাজার গুলো তদারকি করে উত্তম স্থানে দোকান নির্ধারণ করুন।
মনে রাখবেন যেকোনো ব্যবসা শুরু করার পূর্বে ভোক্তার কথা মাথায় রাখতে হবে।
ঢাকার নবাবপুর মার্কেট থেকে সকল প্রকার ইলেকট্রনিক্স পন্য পাইকারি দামে ক্রয় করতে পারবেন।
উক্ত মালামাল যে দামে ক্রয় করবেন তার সাথে সকল প্রকার খারচ যোগ করে ভালো লাভে আপনি স্থানীয় বাজারে বিক্রয় করতে পারবেন।
হার্ডওয়্যার মালামালের পাইকারি ব্যবসা
কয়েকটি পাইকারি ব্যবসার নাম উল্লেখ করলে হার্ডওয়্যার ব্যবসার নাম উল্লেখ না করলেই নয়।
হার্ডওয়্যার মালামালের চাহিদা দিন দিন ক্রমেই বেড়ে চলেছে। আপনি যদি পাইকারি হার্ডওয়্যার ব্যবসা করতে চান তাহলে উপজেলা বা ইউনিয়ন পর্যায়ে বড় কোন বাজারে দোকান দিতে হবে।
কারণ পাইকারি ব্যবসা করতে হলে ভোক্তার পরিমাণ বেশি হতে হবে ।
এ ছাড়া আপনি এই ব্যবসা টি খুচরা ব্যবসা হিসাবে করতে পারেন।
কাঁচামালের পাইকারি ব্যবসা
কাঁচামালের পাইকারি ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসা। আপনি গ্রামের বিভিন্ন বাজার থেকে কাঁচামাল ক্রয় করে শহরে পাইকারি দামে বিক্রয় করতে পারেন।
এই ব্যবসায় খুভ বেশি পূজি লাগে না। তবে এই ব্যবসায় লাভ করতে হলে আপনাকে বাজার এবং পন্যের চাহিদার বিষয়ে সম্মুখ জ্ঞান রাখতে হবে।
কাঁচামালের ব্যবসায় একটা ঝুঁকি রয়েছে তা হলো কাঁচামাল পচে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাছাড়া এই ব্যবসায় তেমন কোন ঝুঁকি নেই।
চা-পাতার পাইকারি ব্যবসা
ব্যবসা হিসাবে চা পাতার ব্যবসা বেশ লাভজনক। যে কোন ব্যবসা শুরু করার আগে বাজারে উক্ত পন্যের চাহিদা কেমন তা যাচাই করতে হয়। আর বাংলাদেশের
আমরা জানি বাংলাদেশে সব থেকে চা উৎপাদন হয় সিলেট এলাকায়।
আপনি যদি সিলেটে কোন ডিলারের সাথে যোগাযোগ করে আপনার এলাকায় চা সাপ্লায় দেন তাহলে এই ব্যবসায় আপনি ভাল লাভ করতে পারবেন।
কসমেটিক এর পাইকারি ব্যবসা
কসমেটিক এর পাইকারি ব্যবসা বর্তমানে অনেক লাভজনক একটি ব্যবসা। এই ব্যবসায় লসের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
বাংলাদেশের প্রায় সকল মানুষ কম বেশি কসমেটিক ব্যবহার করে।
আপনি এই ব্যবসা টি করতে চাইলে ঢাকা চকবাজার থেকে পাইকারি দামে পন্য কিনতে পারেন অথবা সরাসরি আমদানি করতে পারেন।
আপনি পাইকারি দরে আপনার পন্য বিক্রয় করলেও ভাল লাভ করতে পারবেন।
সিগারেটের পাইকারি ব্যবসা
সিগারেটের পাইকারি ব্যবসা বর্তমানে ভালই চলে। যেহেতু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোম্পানি কর্তৃক সিগারেট দোকানে দোকানে স্প্লাই দিয়ে থাকে তাই আপনাকে লোকাল এলাকায় এই ব্যবসা টি করতে হবে।
আপনি কম দামে কোম্পানির রিপ্রেজেনটেটিভ এর নিকট হতে সিগারেট ক্রয় করে দোকানে দোকানে সাপ্লাই দিয়ে বেশ ভালো লাভ করতে পারবেন।
পাইকারি মশলার ব্যবসা
লাভজনক কয়েকটি পাইকারী ব্যবসার মধ্যে পাইকারি মশলার ব্যবসা উল্লেখ করা যেতে পারে।
এই ব্যবসা টি আপনি বড় ও মাঝারি পরিসরে শুরু করতে পারেন।
বাংলাদেশের প্রায় সকল মশলা বিভিন্ন দেশ থেকে আনদানি করতে হয়। প্রথমে আপনি কোন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান থেকে পন্য ক্রয় করে আপনার এলাকায় একটি দোকান দিয়ে খুচরা দোকানিদের নিকট পাইকারি দামে মশলা বিক্রয় করতে পারেন।
এছাড়া দেশিও মশলা আইটেম যেমন, হলুদ,শুখনা মরিচ গুড়া করে প্যাকেট জাত করে বিভিন্ন দোকানে সাপ্লাই দিতে পারেন।
পাইকারি বাটিক্স আইটেম এবং সুতার ব্যবসা
পাইকারি বাটিক্স আইটেম এবং সুতার চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। গ্রাম এলাকায় ও পাইকারি বাটিক্স আইটেম এবং সুতার চাহিদা বাড়ছে।
সুতরাং আপনি বাটিক্স আইটেম এবং সুতার পাইকারি এবং খুচরা ব্যবসা করে লাভবান হতে পারবেন।
ছোট ফ্যাক্টরি আইডিয়া
জনবহুল বাংলাদেশে ক্রমেই বেকারত্বের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাকরি ও কৃষি জমির পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে।
এমতাবস্থায় উদ্যোক্তার সংখ্যা ও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর প্রতিটি সফল উদ্যোক্তার স্বপ্ন থাকে তার একটি ফ্যাক্টরি দাড় করানো।
এই পর্যায়ে আলোচনা করা হবে নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে কয়েকটি ছোট ফ্যাক্টরি আইডিয়া সম্পর্কে।
আরও দেখুন – ই ট্রেড লাইসেন্স রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আরবি নাম দেখুন।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কয়েকটি আরবি নাম যেমন-
- মুসলিম সপ
- হালাল সপ
- উম্মাহ ফ্যাশন হাউস
- ইকরা ফ্যাশন
- সালাম সপ
- আল হায়াত এক্সক্লুসিভ সপ
- আল হেরা ফার্মেসি
- সুন্নাহ মেডিসিন হাউস
- শেফা মিডিকেল
- ইসলাম গ্রোসারি সুপার শপ
কয়েকটি ছোট ফ্যাক্টরি আইডিয়া
১। দুগ্ধ জাতীয় পন্য তৈরির ফ্যাক্টরি
২। বিভিন্ন প্রকার তেল উৎপাদন ফ্যাক্টরি
৩। গবাদি পশুর খাদ্য উৎপাদন করার ফ্যাক্টরি
৪। বেকারি আইটেম বিভিন্ন খাদ্য পন্য তৈরির ফ্যাক্টরি
৫। মশলা জাতীয় পন্য যেমন হলুদের গুড়া,মরিচের গুড়া, প্যাকেটজাত মশলা ইত্যাদি
৬। তারের নেট তৈরির ফ্যাক্টরি
৭। কাগজের ঠোঙা তৈরির ফ্যাক্টরি
৮। হাস মুরগির বিভিন্ন প্রকার ফিড তৈরির ফ্যাক্টরি
৯। ওয়েল্ডিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন জিনিস তৈরি কারে বিক্রি করা।
১০। কাপড়ে বিভিন্ন প্রকার এম্বব্রয়টারি ডিজাইন করে বিক্রি করা।
সয়াবিন তেলের পাইকারি বাজার কোথায়?
সয়াবিন তেলের পাইকারি বাজার চট্টগ্রাম এর খাতুনগঞ্জে।
পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ের মধ্যে পার্থক্য কি?
পাইকারি ব্যবসা হলো উৎপাদন কারী প্রতিষ্ঠান থেকে পন্য ক্রয় করে খুচরা দোকানিদের কাছে বিক্রি করা। আর পাইকারি দোকানদার থেকে পন্য ক্রয় করে ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি করাকে খুচরা ব্যবসা বলে।
খুচরা বিক্রেতা কাকে বলে?
কোন ক্রেতা যখন পাইকারদের থেকে পন্য ক্রয় করে প্রান্তিক গ্রাহক পর্যায়ে পন্য বিক্রয় করে তখন তাকে খুচরা বিক্রেতা বলে।
রিটেল কাকে বলে?
রিটেল (Retail) একটি ইংরেজি শব্দ, যার অর্থ হলো খুচরা। অর্থাৎ রিটেল বলতে খুচরা ব্যবসা কে বোঝায়।
বেকারি পণ্যের ব্যবসা লাইসেন্স সম্পর্কে জানুন।
বেকারি পণ্যের ব্যবসা লাইসেন্স বা বেকারি পণ্যের ব্যবসা করতে যে লাইসেন্স টি প্রয়োজন তা হল একটি ট্রেড লাইসেন্স এবং বি এস টি আই থেকে অনুমোদন।
বেকারী পণ্যের তালিকা
বিভিন্ন বেকারী বিভিন্ন রকম পন্য তৈরী করে থাকে এবং ভিন্ন ভিন্ন দাম নির্ধারণ করে থাকে। তবে সচারাচর যে সকল আইটেম তৈরি করে তা হলো, বিভিন্ন প্রকারের পিজা/বার্গার, বিভিন্ন প্রকার বিস্কুট, কেক, লাড্ডু, চানাচুর, প্যটিস ইত্যাদি।
শেষ কথা
কয়েকটি পাইকারি ব্যবসার নাম ও ছোট ফ্যাক্টরি আইডিয়া সম্পর্কে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
এছাড়াও এখানে উক্ত বিষয়ে সম্পর্কিত বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে।
মূলত যেকোনো ব্যবসা শুরু করার আগে উক্ত ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত খোজ খবর নিতে হয়।
অনলাইনে বা ইউটিউবে কোন কন্টেন্ট এ লোভনীয় প্রচার দেখে ব্যবসায় নামা উচিত নয়।
এক্ষেত্রে প্রয়োজনে অভিজ্ঞ ব্যাক্তি দের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহন করুন।