অংশীদারি চুক্তি কি বা অংশীদারি চুক্তিপত্র কি এবং অংশীদারি ব্যবসায় চুক্তি পত্রের নমুনা সম্পর্কে একজন ব্যবসায়ীর জানা থাকা অনেক জরুরি।
ধরে নিলাম আপনি কোন ব্যবসায় একাকী শুরু করলেন। ধীরে ধীরে আপনার ব্যবসার পরিধি বাড়লো। ব্যবসায় পরিধি বাড়ার সাথে সাথে আপনার প্রয়োজন হবে অতিরিক্ত, মূলধন, জনবল সময় ইত্যাদি।
আপনি যদি মনে করেন আরো সাথে মিলে ব্যবসাটি পরিচালনা করবেন এবং তার থেকে মূলধন গ্রহণ করবেন তাহলে তা অংশীদারি ব্যবসা বলে গণ্য হবে।
অংশীদারি ব্যবসার ক্ষেত্রে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রায়ন করতে হয় যা চুক্তি আকারে লিপিবদ্ধ হয়। যার ফলে আপনাদের ব্যবসা নিরাপদ রোগী মুক্ত এবং কোন প্রকার লতা ছাড়া পরিচালিত হবে।
এক কথায় আমরা বলতে পারি যে কোন ব্যবসা দুই বা ততোধিক ব্যক্তির সাথে করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি নীতি নির্ধারণ করে নিতে হয় যা ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা প্রকাশ করে।
এই আর্টিকেলে জানব অংশীদারি চুক্তি কি বা অংশীদারি চুক্তিপত্র কি এবং অংশীদারি ব্যবসায় চুক্তি পত্রের নমুনা সম্পর্কে।
চুক্তি কাকে বলে?
যখন কোন পক্ষ অপর কোন পক্ষের সাথে কোন কাজ বা বস্তুর বিনিময়ে কোন কিছু দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে তাকে চুক্তি বলে।
অংশীদারি চুক্তি কি?
দুই বা ততোধিক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত ব্যবসা বা লেনদেন যা উভয়ের সক্রিয় অংশ গ্রহণের মাধ্যমে হয়ে থাকে।
আর এই অংশীদারি ব্যবসা পরিচালনার জন্য অংশীদারদের মধ্যে লিখিত বা অলিখিত চুক্তি সম্পাদিত হয় তাই মূলত অংশীদারি চুক্তি।
এক কথায় বলা যায় এই ব্যবসা পরস্পর চুক্তির মাধ্যমে সংগঠিত হয়ে থাকে। ব্যবসা পরিচালনার এই চুক্তিকেই অংশীদারী চুক্তি বলা হয়।
আরও দেখুন- গ্রামে বিজনেস আইডিয়া বা কিসের ব্যবসা করা যায় এবং কয়েকটি পাইকারি ব্যবসার নাম ও ছোট ফ্যাক্টরি আইডিয়া
অংশীদারি ব্যবসার চুক্তিপত্র বা অংশীদারি চুক্তিপত্র কি?
আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি অংশীদারি ব্যবসা মূলত একটি চুক্তির মাধ্যমে হয়ে থাকে। অংশীদারি ব্যবসায় এই চুক্তি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মূলত এই চুক্তি অংশীদারি ব্যবসার মূল চালিকাশক্তি। অংশীদারি ব্যবসার চুক্তি গুলো অংশীদারদের মধ্যে হয়ে থাকে। এই চুক্তি মৌখিক,লিখিত বা লিখিত নিবন্ধিত হয়ে থাকে।
সবথেকে উত্তম উপায় হল এবং নিবন্ধিত চুক্তিপত্র। যার ফলে অংশীদাররা আর্থিক এবং আইনি জটিলতা এড়ানো সহ বিভিন্ন সহায়তা খুব সহজে পেতে পারে।
অংশীদারদের মধ্যে এই লিখিত চুক্তি তৈরি করে জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা নোটারী পাবলিক কর্মকর্তার নিকট হতে হলফনামা বা এভিডেভিড করে নিতে হয়।
এভাবে অংশীদারদের মধ্যে লিখিত চুক্তি রেজিস্ট্রেশন নিবন্ধন করতে হয়। এই প্রক্রিয়াকে অংশীদারি চুক্তিপত্র বলা হয়।
উল্লেখ্য এই চুক্তি পত্রটি সর্বনিম্ন ২০০০/= টাকার স্টাম্পে দলিল আকারে লিখিত হতে হবে তাহলে উক্ত চুক্তি পত্রটি উল্লেখযোগ্য ভাবে আইনি গ্রহনযোগ্যতা পাবে।
বাজারে ২০০০ টাকার স্টাম্প না থাকলে ১০০ টাকার স্টাম্প ২০ টি লিখতে হবে।
এই চুক্তিপত্রে ব্যবসা বা লেনদেন সংক্রান্ত নীতিমালা লিখিত আকারে প্রকাশ করতে হবে। পরবর্তীতে কোন প্রকার চুক্তি ভংগ হলে বা নীতিমালা বহির্ভূত কাজ হলে এক পক্ষ অন্য পক্ষ কর্তৃক আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারবেন ।
ব্যাবসায়িক চুক্তি নামা কি?
ব্যবসার ক্ষেত্রে কারো সাথে ব্যবসা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকার চুক্তি হতে পারে। সংক্ষেপে যাকে ব্যবসায়িক চুক্তি নামা বলা হয়ে থাকে।
হতে পারে আপনি কোন এক পক্ষ থেকে বিনিয়োগ নিলেন অথবা কেউ আপনার ব্যবসায় একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করল তখন উক্ত বিনিয়োগটি অবশ্যই আপনাকে একটি চুক্তি পত্রের মাধ্যমে সম্পাদন করতে হবে।
এক্ষেত্রে পত্রটিকে বলা হবে ব্যবসায়িক বিনিয়োগ চুক্তিনামা। এমনভাবে বিভিন্ন প্রকার ব্যবসায়িক চুক্তি নামা বা চুক্তিপত্র হয়ে থাকে।
তবে যে কোন প্রকার চুক্তির ক্ষেত্রে লিখিত এবং নিবন্ধিত বা হলফনামা বা এভিডেভিড করে নেওয়ায় উত্তম। এ পর্যায়ে একটি ব্যবসায়িক বিনিয়োগ চুক্তিনামা বা চুক্তিপত্রের নমুনা নিচে দেওয়া হল।
ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম বা ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র নমুনা business franchise agreement sample
ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম এখানে আলোচনা করা হলো। নিচে ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম বা ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র লেখার নমুনা দেওয়া হল।
চুক্তি পত্র
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
“ ব্যবসার বিনিয়োগের চুক্তিনামা “
নামঃ মোঃ রবিউল ইসলাম ,পিতাঃ মোঃ রফিক উদ্দীন , ঠিকানাঃ রহিম নগর , ঝিকরগাছা, যশোর।
—— প্রথম পক্ষ
নামঃ মোঃ সোলাইমান ইসলাম ,পিতাঃ মোঃ শরিফ উদ্দীন , ঠিকানাঃ রঘুনগর , ঝিকরগাছা, যশোর।
——-দ্বতীয় পক্ষ
পরম করুনাময় মহান আল্লাহর নামে অত্র ব্যবসায়ের চুক্তিপত্রের বয়ান আরম্ভ করিলাম ।
১ম পক্ষের কাছ থেকে ২য় পক্ষ ব্যবসায়ের জন্য নগদ ৬,০০,০০০/= ( ছয় লক্ষ ) টাকা মাত্র নিম্ন স্বাক্ষীগনের সম্মখে বিনিয়োগ হিসাবে গ্রহন করিলেন।
২য় পক্ষ ১ম পক্ষের কাছ থেকে ব্যবসায়ের জন্য নগদ ৬,০০,০০০/= ( ছয় লক্ষ ) টাকা মাত্র নিম্ন স্বাক্ষীগনের সম্মখে নিম্নোক্ত শর্ত মোতাবেক বিনিয়োগ হিসাবে গ্রহন করিলেন।
শর্তাবলী
- ১ম পক্ষ থেকে ২য় পক্ষ ৬,০০,০০০/= টাকা বনিয়োগ গ্রহন করেছেন তা চাহিবা মাত্র ২ মাসের মধ্যে ১ম পক্ষ কে ফেরত দিতে বাধ্য থাকিবে।
- ২য় পক্ষ ১ম পক্ষকে বাৎসিরিক মুনাফা ৩১ ডিসেম্বর এর মধ্যে পরিশোধ করিবে। যা ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক প্রদান করিবে।
- ২য় পক্ষ তার মোট মুনাফার ২০% হারে প্রদান করিবেন।
- কোন কারণে ২য় পক্ষ ব্যবসায় লোকসান হলে ১ম পক্ষকে অবহিত করবেন এবং উপযুক্ত কারন হলে ১ম পক্ষ কে প্রদান করবেনা ।
- ২য় পক্ষ উপরোক্ত শর্ত ভংগ করলে ১ম পক্ষ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
- ২য় পক্ষ কোন প্রকার অবৈধ ব্যবসা করলে তার দায় ১ম পক্ষ গ্রহন করবেন না ।
- ২য় পক্ষ প্রথম পক্ষকে ৬,০০,০০০/- টাকার একটি ব্যাংক চেক প্রদান করবেন। এবং টাকা পরিশোধ করলে উক্ত চেক ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে।
এতদ্বার্থে স্বেচ্ছায় স্বঞ্জানে , সুস্থ শরীরে , সরল চিত্তে , অন্যের বিনা প্ররোচনায় অত্র ব্যবসার চুক্তিপত্র দলিল লিখাইয়া পাঠ করাইয়া উহার মর্ম অবগত হইয়া নিম্ন স্বাক্ষরিত মোকাবেলায় আমরা উভয় পক্ষ যথারিতি সহি করিয়া দিলাম।
সাক্ষীগনের স্বাক্ষর —–
যৌথ ব্যবসার চুক্তিপত্র বা অংশীদারি ব্যবসায় চুক্তি পত্রের নমুনা বা যৌথ ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা বা অংশীদারি চুক্তি পত্রের নমুনা
পাতা -১
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
অংশীদারি চুক্তিপত্র দলিল
( ১৯৩২ সনের অংশীদারি আইন অনুযায়ী অদ্য… জানুয়ারি… ইং তারিখে নিম্নলিখিত অংশীদারগণের মধ্যে অংশীদারী চুক্তিপত্র সম্পাদিত হইল )
মো:…….. পিতাঃ….. মাতাঃ……… জন্ম তারিখঃ…….,
ঠিকানাঃ
গ্রামঃ……. ডাকঃ…….ইউনিয়নঃ…….উপজেলাঃ……. জেলাঃ……. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী।
—- প্রথম পক্ষ
মো:…….. পিতাঃ….. মাতাঃ……… জন্ম তারিখঃ…….,
ঠিকানাঃ
গ্রামঃ……. ডাকঃ…….ইউনিয়নঃ…….উপজেলাঃ……. জেলাঃ……. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী।
—- দ্বিতীয় পক্ষ
পাতা -২
মো:…….. পিতাঃ….. মাতাঃ……… জন্ম তারিখঃ…….,
ঠিকানাঃ
গ্রামঃ……. ডাকঃ…….ইউনিয়নঃ…….উপজেলাঃ……. জেলাঃ……. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী।
—- তৃতীয় পক্ষ
ভুমিকাঃ
যেহেতু আমরা একে অপরের পরিচিত , ঘনিষ্ঠ এবং একে অপরে আলোচনা সমঝোতা সাপেক্ষে উপনীত হয়েছি যে আমরা অংশীদার ভিত্তিতে ব্যবসা পরিচালনা করব এবং ইতিমধ্যে স্বল্প বিনিয়োগ করেছি ।
সেহেতু উপরে উল্লেখিত অংশীদারগণের প্রাথমিক প্রস্তাব আলাপ আলোচনার মাধ্যমে একমত হয়ে লিখিত অংশীদারী দলিল সম্পাদনে এতদ্বারা স্বীকার,ঘোষণা,প্রকাশ ও প্রচার করিতেছি তা নিম্নে আলোচনা করা হলো ।
চলমান পাতা -৩
পাতা ৩
১। অংশীদারী ব্যবসার নামঃ
এই অংশীদারী চুক্তিপত্র অত্র দলিল বলে প্রতিষ্ঠানের নাম হইবে “ মেসার্স ফ্রেনডস মেশিনারিজ এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং “(M/S FRIENDS MECHING AND ENGINEERING)
চলমান পাতা -৪
পাতা ৪
২। অংশীদারী ব্যবসার ঠিকানাঃ
ঠিকানাঃ ২০/৪ শহীদ আহসান সড়ক, যশোর।
ভবিষ্যতে যে কোন কারণে অংশীদারগনের সম্মতিতে এই ঠিকানা পরিবর্তন করা হতে পারে এবং বাংলাদেশের যে কোন এলাকায় শাখা খুলে ব্যবসা করা হতে পারে।
চলমান পাতা – ৫
পাতা -৫
৩। অংশীদারী ব্যবসার মূলধনঃ
অত্র অংশীদারী ব্যবসার মূলধন ১০,০০,০০০( দশ লক্ষ) টাকা মাত্র।
আনুপাতিক হারঃ
- মোঃ রবিউল ইসলাম – ৪০% – ৪,০০,০০০ ( চার লক্ষ ) টাকা মাত্র।
- মোঃ সোলাইমান – ৩০% – ৩,০০,০০০ ( তিন লক্ষ ) টাকা মাত্র।
- মোঃ হাসান আলী – ৩০% – ৩,০০,০০০ ( তিন লক্ষ ) টাকা মাত্র।
চলমান পাতা ৬
পাতা -৬
৪। অংশীদারদের পদবীঃ
অংশীদারদের সর্বসম্মতি ক্রমে তাহাদের পদবী নির্ধারণ করা হয়েছে যা নিম্নরুপ –
- মোঃ রবিউল ইসলাম – ব্যবস্থাপনা অংশীদার
- মোঃ সোলাইমান – অংশীদার
- মোঃ হাসান আলী – অংশীদার
উক্ত পদ সমূহ সর্বসম্মতি ক্রমে পরিবর্তিত হইতে পারে।
চলমান পাতা ৭
পাতা -৭
৫। অংশীদারী কারবার আরম্ভ ও চুক্তি দলিলের বিধানবলী প্রয়োগঃ
অংশীদারী প্রতিষ্ঠান “ মেসার্স ফ্রেনডস মেশিনারিজ এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং “(M/S FRIENDS MECHING AND ENGINEERING) যা ৫ জানুয়ারী ২০২৫ তারিখ থেকে সূচনা লাভ করে এবং আজ হতে সকল বিধি বিধান প্রয়োগ হইয়াছে বলে গন্য হইবে।
চলমান পাতা ৮
পাতা -৮
৬। ব্যবসায়ের প্রধান উদ্দেশ্যঃ
১। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে আমরা বিভিন্ন মেশিন এর পার্টস , ইঞ্জিন এবং এ সংক্রান্ত সকল সার্ভিস বা মেরামত এর মাধ্যমে মুনাফা লাভ করা ।
২। ব্যবসা প্রসারে বিভিন্ন এলাকায় মার্কেটিং এর জন্য বিভিন্ন দোকানে ভিজিট করা এবং আমাদের পন্য ও সেবা প্রদানের মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করা।
চলমান পাতা ৯
পাতা -৯
৩। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে অর্জনের জন্য সব ধরনের ট্রেডিং,সাপ্লাই , প্রডাকশন ও কন্সট্রাকশন সব ধরনের আমদানি ও রপ্তানি এবং দেশে ও বিদেশে সব ধরনের ব্যবসা করা।
এভাবে আপনার ব্যবসার বিভিন্ন উদ্দেশ্য উল্লেখ করতে হবে ।
চলমান পাতা ১০
পাতা -১০
৭। অংশীদারী ব্যবসার মূলধন বৃদ্ধিঃ
অত্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মূলধন হিসাবে প্রাথমিক ভাবে ইতিমধ্যে প্রত্যেকে যথাক্রমে অংশীদারের অংশ অনুসারে প্রাভাম্ভিক বিনিয়োগ করেছে । পরবর্তিতে প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজন মোতাবেক অংশীদারগনের সম্মতিক্রমে গৃহিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মূলধন বৃদ্ধির উপযুক্ত ব্যবস্থা করিব।
কোন অংশীদার যদি তাহার হিসাবের অধিক অর্থ প্রদান করে তাহলে তা ধার হিসাবে গন্য হবে।
চলমান পাতা ১১
পাতা -১১
৮। অংশীদারগনের লাভ-লোকসান এর অংশ
অত্র অংশীদারি ব্যবসায়ের অংশীদারগণ লাভ ও লোকসান যথাক্রমে অংশীদারগনের অংশ অনুসারে লভ্যাংশ নির্ধারণ করা হবে অর্থাৎ উক্ত অংশীদারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভাড়া,কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন, ভাতা , বিদ্যুৎ বিল এবং অন্য যাবতীয় খরচ অত্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অংশ হয়তে খরচ করা হবে। সকল খরচ বাদ দিয়ে যে টাকা লাভ হবে তা সকল অংশীদারের মধ্যে আনুপাতিক হারে বন্ঠন করা হবে।
চলমান পাতা ১২
পাতা -১২
৯। অংশীদারী ব্যবসায়ের পরিচালনা
অত্র অংশীদারী ব্যবসায়ের সুষ্ঠু পরিচালনার স্বার্থে প্যত্যেক অংশীদার উক্ত ব্যবসা পরিচালনা করবে। তবে কোন অংশীদার অন্য কোন অংশীদারের উপরে কোন প্রকার প্রভাব খাটাতে পারবে না । এমন কোন বিষয় যা উক্ত দলিলে যুক্ত করা হয় নাই সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হলে সকল অংশীদার মিলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
চলমান পাতা ১৩
পাতা -১৩
১০। অংশীদারগনের অযোগ্যতা
- যদি কোন অংশীদার লিখিত নোটিশ দিয়ে অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে।
- কোন কারনে যদি অদালত দ্বারা পাগল ঘোষিত হলে।
- কোন সদস্য যদি আদালত এর মাধ্যমে দেউলিয়া ঘোষিত হলে।
- কোন সদস্য যদি পর পর ৩ বার বার্ষিক সভায় অনুপস্থিত থাকে।
- বোর্ডের লিখিত অনুমতি ব্যতিত প্রতিষ্ঠানের সমজাতীয় ব্যবসা শুরু করে।
চলমান পাতা ১৪
পাতা -১৪
১০। সদস্যদের ভোটাধিকার
অংশীদার গন প্রত্যেক সদস্য যেকোন সিদ্ধান্তে একটি করে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। তবে যদি কোন অংশীদার অধিক অর্থ বিনিয়োগ করে থাকে তাহলে সে একটি ভোট দিতে পারবেন।
যদি কোন অংশীদার ভোটাধিকার প্রদানের সময় হাজির না থাকে তাহলে সে তার জন্য প্রক্সি ভোটর দ্বারা ভোট প্রদান করতে পারবেন।
চলমান পাতা ১৫
পাতা -১৫
১১। বোর্ড মিটিং করার প্রক্রিয়া
অত্র অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ কোন সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে নোটিশের মাধ্যমে বোর্ড মিটিং আহবান করবে।
উক্ত বোর্ড মিটিং অনুষ্ঠিত হবার দুই-তিন আগে উক্ত বোর্ড মিটিং এর নোটিশ প্রদান করবে। এরপর সকল অংশীদারগনের উপস্থিতিতে মিটিং অনুষ্ঠিত হবে এবং যে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে তা সকলের সম্মতিতে পাশ করানো হবে।
চলমান পাতা ১৬
পাতা -১৬
১২। বার্ষিক সাধারণ সভা করার প্রক্রিয়া
উক্ত দলিলে কোন প্রক্রিয়ার বার্ষিক সাধারণ সভা আহবান করা হবে তা এখানে উল্লেখ থাকবে । এক্ষেত্রে বার্ষিক পরিকল্পনা অনুয়ায়ী বার্ষিক সাধারণ সভা নোটিশের মাধ্যমে আহব্বান করবে।
এই সাধারণ সভায় বিভিন্ন দিক যেমন আয় ,ব্যয় সহ সকল প্রকার আলোচোনা ,পরামর্শ ও পরিকল্পনা প্রনয়ন করতে হবে।
চলমান পাতা ১৭
পাতা -১৭
১৩। ব্যবস্থাপনা অংশীদারের ক্ষমতা
- ব্যবসা ও অন্যান্য সকল বিষয় পরিচালনা করা
- প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সকল নথিতে স্বাক্ষর করা
- প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মচারি কর্মকর্তার নিয়োগ , বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সকল সুযোগ সুবিধার দেখাশোনা করা
- প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি পরিচালনা করা
- প্রতিষ্ঠানের সকল প্রশাসনিক দিক পরিচালনা করা
- প্রতিষ্ঠানের সকল বিল ভাওচার ,সার্টিফিকেট , দলিল ,চুক্তি ইত্যাদি পত্রে স্বাক্ষর করা ।
চলমান পাতা ১৮
পাতা -১৮
১৪। অংশীদারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনা
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে একটি ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনা করবে অত্র প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা অংশিদার ।তবে অত্র প্রতিষ্ঠানের সকল সদস্য বোর্ড রেজুলেশনের মাধ্যমে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনার দ্বায়িত্ব প্রদান করিতে পারিবেন।
চলমান পাতা ১৯
পাতা -১৯
১৫। আয়-ব্যায়ের হিসাব সংরক্ষণ
অত্র প্রতিষ্ঠানের সকল আয়-ব্যায়ের হিসাব, বিল ভাওচার সকল তথ্য খাতা পত্র ইত্যাদি অংশীদার গন সংরক্ষণ করবে। এ সকল হিসাব পত্র বার্ষিক সাধারণ সভায় উত্থাপন করবে । এবং বার্ষিক অডিটের মাধ্যমে আয়-ব্যয় হিসাব মিলাবেন।
চলমান পাতা ২০
পাতা -২০
১৬। অংশীদারগনের পক্ষে প্রতিষ্ঠানের দায়।
আইনানুগ পদ্বতী ব্যতিত ভিন্ন কোন ক্ষেত্রে কোন অংশীদারদের ব্যক্তি গত দায় দেনা বা অন্য কোন কোনরুপ দায়ের জন্য অত্র প্রতিষ্ঠান দায়ী থাকিবে না কিংবা দায়ী বলিয়া গন্য হবে না।
চলমান পাতা ২১
পাতা -২১
১৭। অংশীদারী ব্যবসায় আইনের প্রাধান্য
অত্র অংশীদারী চুক্তিপত্র ১৯৩২ সালের অংশীদারী আইন এর অধীনে প্রনীত ও গ্রহীত হইবে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে উক্ত আইনের বিধানাবলী প্রযোয্য হইবে।
চলমান পাতা ২২
পাতা -২২
১৮। সাক্ষীগনের নাম, স্বাক্ষর ও ঠিকানা
শেষ পাতা
অংশীদারি ব্যবসায় চুক্তি পত্রের বিষয়বস্তু
অংশীদারি ব্যবসায় চুক্তি পত্রে কয়েক টি বিষয় উল্লেখ করা হয়ে থাকে যা উক্ত চুক্তি পত্রের গ্রহনযোগ্যতা প্রকাশ করে । নিম্ন অংশীদারি ব্যবসায় চুক্তি পত্রের বিষয়বস্তু উল্লেখ করা হলো।
- অংশীদারি ব্যবসার নাম
- অংশীদারি ব্যবসার ঠিকানা
- ব্যবসায়ের প্রকৃতি ও উদ্দেশ্য
- প্রতিষ্ঠানের কার্যকাল ও স্থায়ীত্ব বা মেয়াদ
- প্রত্যেক অংশীদারের নাম, ঠিকানা ও পেশা
- অংশীদারের মূলধনের পরিমান ও পরিশোধ পদ্ধতি
- অংশীদারি ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার নিয়মসমূহ ‘
- অংশীদারি ব্যবসায় লাভ ও লোকসান বণ্টনের প্রক্রিয়া
- অংশীদারী ব্যবসায়ের পরিচালনা পদ্ধতি
- অংশীদারদের দায়িত্ব, ক্ষমতা ও অধিকার
- অংশীদারদের অবসরগ্রহণ ও বহিষ্কার পদ্ধতি
- ভবিষ্যত সমস্যার সমাধান পদ্ধতি
- অংশীদারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনা
- ব্যবসায়ের জন্য ঋণ গ্রহণের পদ্ধতি
- অংশীদারগনের পক্ষে প্রতিষ্ঠানের দায়।
মালিকানার ভিত্তিতে অংশীদারি ব্যবসায় কত প্রকার?
দুই প্রকার
১। সাধারণ অংশীদারী ব্যবসা
২।সীমাবদ্ধ অংশীদারী ব্যবসা
ব্যাংকিং অংশীদারি ব্যবসায়ের সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা কত?
ব্যাংকিং অংশীদারি ব্যবসায়ের সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা ১০
শেষ কথা
এতক্ষণ আলোচনা করা হয়েছে অংশীদারি চুক্তি কি বা অংশীদারি চুক্তিপত্র কি এ বিষয়ে। এছাডা অংশীদারি ব্যবসায় চুক্তি পত্রের নমুনা বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
এছাড়া যৌথ ব্যবসার চুক্তিপত্র বা অংশীদারি ব্যবসায় চুক্তি পত্রের নমুনা বা যৌথ ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা এখানে দেওয়া হয়েছে।
অংশীদারী ব্যবসার মুল পূজী হলো চুক্তি। এই ব্যবসায় যদি কোন কারনে চুক্তি লংঘন করা হয় তাহলে উক্ত ব্যবসায় ধস নেমে যেতে পারে।
অংশীদারী ব্যবসার হিসাব পত্র অনেক সাবধানে সংরক্ষণ করতে হয়। যেহেতু এই ব্যবসায় একের অধিক অংশীদার থাকে তাই সমস্থ বিষয়ে সচ্ছতা এবং জবাবদীহিতা নিশ্চিত করতে হবে।